শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি:: ওরা মাদক ব্যবসা করতো তাই আমার পোলারে মারছে। আমি রনির বিচার চাই। দুবৃর্ত্তদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার নাজমুলের মা নাছিমা বেগম সংবাদকর্মীদের এ কথা বলেন। ছেলে হারিয়ে শোকে মাতম নাছিমা। ছেলে হত্যার বিচার চান তিনি। আমার মতো কারো মায়ের বুক যেন খালি না হয় এই বলে কান্না করেন সন্তানহারা এ নারী। নাজমুল ছিলো তাঁর সংসারের আয় রোজগারের কর্তা। রাজমিস্ত্রী কাজ করতো নাজমুল।
শুক্রবার সকালে ঢাকার দোহারে পূর্ব শত্রুতার জেরে নাজমুল হোসেন (২৪) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। নিহত নাজমুল উপজেলার রাইপাড়া ইউনিয়নের ইকরাশী গ্রামের আলী বেপারীর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে দোহারের বাঁশতলা বাজারে তারেক খানের দোকানে চা খেতে নাজমুলকে ডেকে নেন তারই বন্ধু মিলন হোসেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে ৩ যুবক এসে নাজমুলকে ধারালো ছোরা দিয়ে ঘাড়ে ও গলায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীরা তাঁকে উদ্ধার করে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমুলকে মৃত ঘোষণা করে। তবে ওইখানে থাকা মিলনকেও চর থাপ্পর দেয় হামলাকারী রনি। তবে এটা তাঁদের পূর্ব পরিকল্পিত সাজানো কি না এমনটা ভাবছে স্থানীয়রা। যেহেতু সে গ্রেপ্তার হয়েছে।
এঘটনায় নাজমুলের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ওই দিন রাতে ৫ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করে দোহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। সন্দেহজনক ভাবে ওই মামলায় আসামী করা হয় আহত মিলন হোসেনকে। পুলিশ মিলনকে শনিবার গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে মিলন এ হত্যার সাথে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করে। সে জানায় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রনি মিয়া ওরফে রনি ডাকাত তাঁকে নাজমুলকে বাঁশতলা আনতে ডেকে পাঠায়। এরপর কিছুক্ষণ পর রনিসহ আরো ২জন এসে তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ার কারণেই নাজমুলকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিলন জানায়।
বাঁশতলা এলাকার রাজনৈতিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই এলাকায় চুরি ডাকাতি, মাদক ও খুনের স্বর্গরাজ্য। গত ৫০ বছরেও কেউ এই এলাকার অপরাধ নির্মুল করতে পারেনি। আমরা এ হতে মুক্তি চাই। পুলিশ আসে পুলিশ যায়। কিন্তু এদের কেউ দমাতে পারে না।
নিহত নাজমুলের ভাই মো. নাসিম বলেন, ওরা আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। দোহারের বাঁশতলা জামালচর রাইপাড়া, খেজুর বাগ, বটতলা, লষ্করকান্দা ও বিলের পাড় এলাকায় মাদক বিক্রি করে রনি ও তার গ্রুপ। কেউ বাধা দিলেই তাঁকে জীবন দিতে হয়। না হয় পঙ্গু হতে হয়।
এ বিষয়ে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, হত্যায় জড়িত মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তবে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রনি মিয়া ওরফে ডাকাত রনিকে ধরতে অভিযান চলছে। রনি একজন দুধর্ষ ডাকাত। তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের ১৬ টি মামলা রয়েছে দোহার থানায়।